
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) ‘জুলাই শহিদ দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে। জুলাই’২৪ গণঅভ্যুত্থানে জাতির জন্য আত্মত্যাগী শহিদদের স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এদিন এ দিবসটি স্মরণে ক্যাম্পাসজুড়ে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
এ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের উদ্দেশ্যে দিবসের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন চত্বরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়।
অন্যদিকে শহিদদের তেজোদীপ্ত ভূমিকাকে যথাযথভাবে তুলে ধরতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক প্রেরিত ডকুমেন্টারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার ফেসবুক পেজে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়।
মঙ্গলবার থেকে গাকৃবি কতৃর্ক জুলাই বিপ্লবের পটভূমিতে তৈরিকৃত ডকুমেন্টারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক—ছাত্র কেন্দ্রে প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে জুলাই শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বুধবার বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দোয়া মাহফিলে বক্তব্য প্রদানের এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহিদরা শুধুই কোনো সময়ের প্রতীক নন, তাঁরা ন্যায় ও গণতন্ত্রের চিরন্তন বাতিঘর।
তাঁদের রক্তের ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়, তবে তাঁদের আদর্শকে বুকে ধারণ করে আমরা পারি একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে।” এ সময় উপাচার্য ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে আহতদের আরোগ্য কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান। জুলাই বিপ্লবকে আরো স্মরণীয় ও বরণীয় করতে আগামী মাসের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আগামীকাল ১৭ জুলাই সকালে ‘‘জুলাই শহিদদের স্মরণে’’ বৃক্ষরোপন ও র্যালি এবং বিকেলে শহিদদের স্মরণে আলোচনাসভা ও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হবে। ২৪ জুলাই হতে ৫ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত নতুন কৃষি অনুষদ ভবনের নিচ তলায় স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়া ৫ আগস্ট জুলাই শহিদদের স্মরণে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও রক্তদান কর্মসূচি এবং বিজয় র্যালি উদযাপন করা হবে। একই দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহিদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনাসভা এবং এ অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থা বিলোপের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলিতে ও সন্ত্রাসীদের হামলায় এ দিনে চট্টগ্রাম, রংপুর ও ঢাকায় অন্তত ৫ জন শহীদ হন।