জুলাইয়ের স্পিরিটে ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আহ্বান ডুয়েট ভিসির

3 Min Read

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুরঃ
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ আমাদের ইতিহাসের এক অনন্য মহাকাব্যিক অধ্যায় উল্লেখ করে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এর ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবদীন বলেছেন, “যেভাবে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, ঠিক সেভাবেই আমাদের আগামী নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।” তিনি বলেন, “জুলাইয়ের এই স্পিরিট যদি আমরা বুকে ধারণ করি, তবে কখনও পথ হারাবে না বাংলাদেশ।”

বুধবার (১৬ জুলাই) ঐতিহাসিক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ শাকিল পারভেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তোয়াব। আলোচনার শুরুতে ‘জুলাই শহিদ দিবস’ উপলক্ষে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ডুয়েট ভিসি আরও বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান সফল হবে তখনই, যখন আমরা বৈষম্যহীন একটি সমাজ গড়ে তুলতে পারব। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনায় বিশ্বমানে নিয়ে যেতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আরেফিন কাওসার বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুধু একটি আন্দোলনের নাম নয়, এটি জাতির সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের প্রতীক। প্রযুক্তি ও নৈতিকতার সমন্বয়ে এমন এক বাংলাদেশ গড়তে হবে, যেখানে প্রকৌশলী মানেই হবে একজন দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক।”

পুলিশ কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান বলেন, “এই অভ্যুত্থান ছিল দীর্ঘদিনের নিপীড়ন, দুর্নীতি, গুম-খুন, লুটপাট ও বাক-স্বাধীনতা হরণে অতিষ্ঠ মানুষের প্রতিরোধ। এই আত্মত্যাগকে ধারণ করে গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

আলোচনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শহীদ শাকিল পারভেজের পিতা, গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী আদালতের প্রথম শহিদ পরিবার সদস্য মো. বলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, “শাকিল সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন, অধিকার আদায়ে লড়াই করেছেন। খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত শহিদ আত্মারা শান্তি পাবে না।”

অনুষ্ঠানে ডুয়েটের বিভিন্ন বিভাগ থেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আফসানা আক্তার (সিই), আতিয়ার রহমান (টিই), মো. আবদুল্লাহ (ইইই) ও তাছনীম আলম সাঈদী (এমএমই) অনুভূতি প্রকাশ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবু তোয়াব বলেন, “আমাদের দায়িত্ব বৈষম্যমুক্ত, বিভেদহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করা।”

এর আগে সকাল ৯টায় ভিসির বাংলোর সামনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর ওপর গ্রাফিতি উদ্বোধন করেন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. জয়নাল আবদীন। পরে ডুয়েট মেডিকেল সেন্টারের আয়োজনে, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বজন’-এর বাস্তবায়ন ও রিদম ব্লাড সেন্টারের সহযোগিতায় রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

একইদিন পুরাতন একাডেমিক ভবনের সামনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান কর্নার’ উদ্বোধন করেন ভিসি। উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যায় ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ উপলক্ষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

Share This Article
Leave a Comment