জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা

আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে জাতীয় নির্বাচন

নিজস্ব প্রতিবেদক
3 Min Read

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ ঘোষণা দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে আজ রাত ৮টা ২০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়া শুরু করেন।

এর আগে গত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আপনারা সকলেই দোয়া করবেন যেন সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান করে এ দেশের সকল নাগরিক একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে সফলভাবে এগিয়ে যেতে পারে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখরভাবে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য সকল প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করবো।

এবারের নির্বাচন যেন আনন্দ-উৎসবের দিক থেকে, শান্তি-শৃঙ্খলার দিক থেকে, ভোটার উপস্থিতির দিক থেকে, সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতার দিক থেকে দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকে সেজন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করতে আগামীকাল থেকে আমরা সকলেই মানসিক প্রস্তুতি ও প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন শুরু করব, বলেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের সম্পর্কে দু-একটা কথা বলতে চাই। এবার আমরা প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার আয়োজন নিশ্চিত করতে চাই।

অর্থনৈতিক দিক থেকে সম্পূর্ণ বিধস্ত বাংলাদেশ যে আবার দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে তার বড় কারণ হলো আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ঐতিহাসিক অবদান। নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নারী ভোটাররা যেন দেশের সর্বত্র নির্দ্বিধায় আনন্দ-উৎসাহ সহকারে তাদের ভোট দিতে পারে এটা নিশ্চিত করতে চাই। এবার যেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নারী ভোটারদের ঢল নামে আমরা সেই লক্ষ্যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেবার কারণে গত ১৫ বছর ধরে নাগরিকবৃন্দ ভোট দিতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে আমরা আমাদের বকেয়া আনন্দসহ মহা আনন্দে ভোট দিতে চাই। এবারের নির্বাচনে জীবনে প্রথমবার ভোট দিতে যাবে এরকম ভোটাররা নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবে, তাদের এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য। এর মধ্যে নতুন নারী ভোটার থাকবে, নতুন পুরুষ ভোটার থাকবে। এর মধ্যে এমন ভোটার থাকবে যারা ১৫ বছর আগে থেকেই ভোট দিতে পারতো; কিন্তু জীবনে একবারও ভোট দিতে পারেনি। এর মধ্যে আসবে যারা ১০ বছর আগে, ৫ বছর আগে ভোট দিতে পারত কিন্তু পারেনি। আর আসবে ভাগ্যবান ও ভাগ্যবতীর দল যারা এই প্রথমবার ভোটার হওয়ার যোগ্যতা লাভ করলো এবং সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেওয়ার সুযোগও পেয়ে গেল।

নির্বাচনের দিনকে আমরা ঈদের উৎসবের মতো করতে চাই। এবারের ভোটের আনন্দ থাকবে সবার মধ্যে। আপনারা সবাই বাচ্চা-কাচ্চাদের নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নাগরিক অধিকার প্রয়োগের মহা আনন্দ পরবর্তী বংশধরদের কাছে তুলে ধরার জন্য।

এখন থেকে প্রতিদিন আলাপ করুন, আপনার এলাকায় ভোটদান ব্যবস্থা কেমন হলে সুন্দর হয়, কেমন হলে আনন্দমুখর হয়, সেটা আগে থেকে ঠিক করার জন্য। নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজের ভিত্তি রচনা হবে এবারের নির্বাচনে। তার জন্য প্রস্তুতি নিন, বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান।

Share This Article
Leave a Comment