গাজীপুরের বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারপোর্ট-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্প এবং ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর চার ও দ্বৈত রেললাইন প্রকল্প দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে ‘গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন’ সংগঠন। শনিবার (৯ আগষ্ট) সকাল ১১টায় গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন,গাজীপুর একটি শিল্প অধ্যুষিত শ্রমিকঘন এলাকা, যেখানে প্রায় ৩ হাজার শিল্প-কারখানা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রিসোর্ট, ব্যাংক-বীমা, মার্কেটসহ প্রায় ৭০ লাখ মানুষের বসবাস। ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ কেবল গাজীপুরবাসীর জন্যই নয়, বরং উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ১৭টি জেলা, ৩টি বিভাগীয় শহর এবং রাজধানী ও চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্যও অপরিহার্য।
বক্তারা উল্লেখ করেন, ১২ বছর আগে শুরু হওয়া বিআরটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে থাকলেও গত ২৭ জুলাই একনেক সভায় অতিরিক্ত ব্যয়ের অজুহাতে এর পরবর্তী কাজ স্থগিত করা হয়। একইভাবে ঢাকা-টঙ্গী-গাজীপুর চার ও দ্বৈত রেললাইন প্রকল্পও দীর্ঘদিনেও শেষ হয়নি। এর ফলে গাজীপুরবাসী ও উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের দুর্ভোগ অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
গাজীপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রেজাউল বারী বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহ শামসুল হক রিপনের সঞ্চালনায় সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শামসুল হক, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল বাতেন, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা ব্যবসায়িক সংগঠনের(আইবিডব্লিউএফ) সভাপতি মোঃ আসাদুজ্জামান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব এস কে সিদ্দিক সরকার, গাজীপুর পূর্বাঞ্চল ঐক্য পরিষদের সভাপতি মোঃ আলী আকবর মিয়া, ভোজপুরি ঐতিহ্য উন্নয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজ উদ দৌল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন মোঃ শামসুল আরেফিন, মোহাম্মদ জাকির হোসেন, তাসলিমা খাতুন ও কে এম এ টিটু প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা ৭দফা দাবি গুলো হলো--
১.বিআরটি প্রকল্পের অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ ফরা।
২.প্রস্তমিত ১৮৭ টি অত্যাধুনিক আর্টিকুলেটেড এসি বাস আমদানি করে বিআরটি প্রকল্পে চালু করা।
৩.ঢাকা গাজীপুর রেললাইন প্রকল্প দ্রুততম সময় শেষ করা।
৪. শিববাড়ি বিআরটি টার্মিনাল ও জয়দেবপুর রেলস্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা
৫.জয়দেবপুর স্টেশনে সকল ট্রেনের যাত্রা বিরতি নিশ্চিত করা এবং ঢাকা গাজীপুর চলাচলকারী কমিউটার ট্রেন দুটি যাত্রী সুবিধা বিবেচনা করে সময় নির্ধারণ ও সক্ষমতা অনুযায়ী চলাচলের ব্যবস্থা করা।
৬.টিকিট প্রাপ্তি সহজ করা, যাত্রী চাহিদা অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ মাসিক টিকেট প্রবর্তন করা।
৭. বহুল আলোচিত রেল ক্রসিং এ ফ্লাইওভার নির্মাণসহ শহরের গুরুত্বপুর্ণ স্থানগুলিতে প্রয়োজনীয় ফুটভার ব্রীজ, আন্ডার গাস নির্মাণ করে নিরাপদ সড়ক পারাপার ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গাজীপুর ঐতিহ্য ও উন্নয়ন সংগঠন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে—“গাজীপুরের জনগণকে আর অবহেলা নয়, উন্নয়নের প্রকৃত সুফল দিন।”দ্রুত উন্নয়নের সুফল হিসাবে বিআরটি এবং রেল প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং যুগোপযোগি যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।