
গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিষয়ে অপপ্রচার করার অভিযোগ এনে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে গাজীপুর কোর্টে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আলমগীর আল মামুনের বেঞ্চে এ আবেদন করেন।
এ বিষয়ে তানভীর সিরাজ সাংবাদিকদের জানান, অপরাধী চক্রের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম না জেনেই ফেসবুকে এ ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়েছেন, যা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এরই মধ্যে জিএমপি কমিশনার এ হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন, যেখানে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। তাই দলের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি বাদী হয়ে মামলাটি রুজু করতে এসেছি। পরে অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আলমগীর আল মামুনের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। ‘আশা করি, ন্যায়বিচার পাব।
মামলার আইনজীবী ও গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে এনসিপির একজন নেতা—উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম—তার উগ্র আচরণ ও কথাবার্তায় সারা দেশে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। যার কারণে সারাদেশের বিএনপির কোটি কোটি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। এভাবে জাতীয়ভাবে অসন্তোষ ছড়ানোর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এসব কারণে আমরা তার শাস্তি দাবি করেছি। কোর্ট সিআইডিকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সিআইডির প্রতিবেদন পাওয়ার প্রেক্ষিতে আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ আগস্ট গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। আসাদুজ্জামান তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তুহিন পরিবার নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বসবাস করতেন। ওই দিন তুহিন হত্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
তিনি তার পোস্টে লিখেন—‘গাজীপুরে এক বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি নিয়ে নিউজ করায় দুপুরে আনোয়ার নামের এক সাংবাদিককে ইট দিয়ে থেতলে দেয় বিএনপির কর্মীরা। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের সাংবাদিক তুহিনকে গাজীপুরের চৌরাস্তায় চা দোকানে রাতে গলা কেটে হত্যা করেছে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা! আনোয়ার এবং তুহিন বন্ধু ছিলেন।’ তবে ৮ আগস্ট ওই পোস্টে এডিট করে ‘চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা’ এ জায়গায় ‘ছিনতাইকারী সন্ত্রাসীরা !’ লিখেন।
সারজিস আলমের এ ফেসবুক পোস্টের জেরেই মামলার আবেদন করেছেন বিএনপি নেতা তানভীর সিরাজ। তার দাবি, সারজিস আলম বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন।